নরসিংদীর শিবপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর হাতে স্ত্রী ও বাড়িওয়ালাসহ ৩ জন খুন হয়েছে। এসময় স্বামীর কোপে আহত হয়েছে আরো দুইজন । রোববার ভোরে উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের কুমরাদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘাতক স্বামী বদল মিস্ত্রী (৫৫) কে আটক করেছে।
আটককৃত বাদল মিস্ত্রী কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার চর-কায়েরী গ্রামের মৃত ইছহাক মিস্ত্রীর ছেলে।
নিহতরা হলো,ঘাতক বাদল মিস্ত্রীর স্ত্রী ও উপজেলার কুমারদী গ্রামের মুন্না মিয়ার মেয়ে নাজমা আক্তার (৪৫),বাড়িওয়ালা তাজুল ইসলাম (৬০),তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০)।
আহতরা হলো, নিহত নাজমার প্রথম স্বামীর ছেলে সোহাগ (১৫) ও বাড়িওয়ালার মেয়ে কুলসুম(২২) । বাদল-নাজমা দম্পতি নাজমার প্রথম স্বামীর সন্তান সোহাগ(১৫) সহ কুমারদী গ্রামের তাজুল ইসলামের বাড়ির উত্তর দোয়ারী দোচালা টিনের ঘরে থাকতো।
পুলিশ জানায়, বাদল মিস্ত্রী ও নাজমার উভয়েরই এটা দ্বিতীয় বিবাহ। পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এর জেরে তাধের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। এরই মধ্যে রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিহত নাজমার ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।ঘরের ভিতর চিৎকারের শব্দ পেয়ে নাজমার প্রথম স্বামীর অপর সন্তান নাদিম(২১) অন্য ঘর থেকে দোচলা টিনের ঘরের সামনে গিয়ে ঘরের দরজার নিচ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে।পরে সে দ্রুত উক্ত ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে তার মা নাজমা বেগম ও ভাই সোহাগকে রক্তাক্ত গুরুতর জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে বাদল মিস্ত্রীকে ধাক্কাধাক্কি করে ঘর হতে বাইরে বের করলে তাদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি হয়। তাদের চিৎকারে বাড়ির মালিকসহ তার স্ত্রী মনোয়ারা, মেয়ে কুলসুম মিলে বাদল মিস্ত্রীকে থামানোর চেষ্টা করলে বাদল মিস্ত্রী তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে এলোপাথারীভাবে আঘাত করে। ফলে তাজুল ইসলামের হাতে, মনোয়ারার পেটের বাম পার্শ্বে কুলসুমের পেটে ঘাই মেরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন। পরে নাদিম পিতাকে থামানোর জন্যে ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে মাথায় এবং ঘাড় বরাবর বারি মারলে আসামী বাদলের হাত হতে ছুরি পড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় দফাদার শীতল পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘাতক বাদল মিস্ত্রিকে আটক করেন । আর আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে আনার পর নাজমা ও মনোয়ারা বেগমকে মৃত ঘোষনা করেন চিকিৎসক। অবস্থার অবনতি হলে তাজুল ইসলামকে ঢাকায় প্রেরন করেন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে সে মারা যায়। আর আহত কুলসুম ও সোহাগকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
জেলা পুলিশের মিডিয়া সমন্বয়ক ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার বলেন, ঘাতক বাদল মিস্ত্রিকে আটক করা হয়েছে। তাকে পুলিশের প্রহরায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিবপুর থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।