শিবপুরের নবাগত ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে মুক্তিযোদ্ধারদের বরণ

আগের সংবাদ

শিবপুরে বিষাক্ত স্পিরিট পানে মাছ ব্যবসায়ীর মৃত্যু অসুস্থ ৪

পরের সংবাদ

নরসিংদীসহ পাঁচ জেলায় হবে ডেডিকেটেড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পপার্ক

মিরর ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২০ , ৯:২১ অপরাহ্ণ

জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে দেশিয় হালকা প্রকৌশল শিল্পের অমিত সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, বগুড়া ও নরসিংদী জেলায় ডেডিকেটেড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প পার্ক (Dedicated Light Engineering Industy Park) স্থাপন করা হবে। শিল্প পার্কগুলোতে স্থাপিত শিল্প কারখানার জন্য দক্ষ জনবলের যোগান নিশ্চিত করতে একই সাথে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রেনিং ইন্সটিটিউটও স্থাপন করা হবে। বিশ্বমানের প্রশিক্ষক ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটগুলোতে দেশিয় জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে।

লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং বিকাশে শিল্প মন্ত্রণালয় চিহ্নিত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত এক আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় আজ এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় শিল্পসচিব কেএম আলী আজম সভাপতিত্ব করেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: হেলাল উদ্দিন এনডিসি হালকা প্রকৌশল শিল্পখাত বিকাশে প্রণিত সুপারিশ তুলে ধরেন।

এ সময় এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী (পারভেজ), বিসিক পরিচালক ড. মোহা: আব্দুস ছালাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো: আব্দুর রাজ্জাক, শিল্প, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, এফবিসিসিআইসহ কমিটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পখাতে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান করতে ডেডিকেটেড শিল্পপার্ক স্থাপন, এখাতের উদ্যোক্তাদের জন্য অল্প খরচে ফান্ড (Low cost fund) সরবরাহ ও আর্থিক প্রণোদনা প্রদান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী ও ব্যবস্থাপক তৈরি, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ, সাবকন্ট্রাকটিং শিল্পের বিকাশ ও আইন প্রণয়ন এবং হালকা প্রকৌশল শিল্প নীতি প্রণয়নের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভায় জানানো হয়, হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পনীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি এখাতের উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণন নিশ্চিত করতে সাবকন্ট্রাকটিং আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ লক্ষ্যে বিসিককে দ্রুত আইনের খসড়া প্রণয়নের নির্দেশনা দেয়া হয়। আইন প্রণয়নের আগ পর্যন্ত সাবকন্ট্রাকটিং বিধিমালার আওতায় উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রয়ের সুযোগ বাড়াতে জাতীয় শিল্পনীতিতে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে শিল্পসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছর হালকা প্রকৌশল শিল্পকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ার’ ঘোষণা করায় এ শিল্পের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে এ শিল্পের বিকাশ ঘটছে। পরিকল্পিতভাবে হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ডেডিকেটেড শিল্পপার্ক স্থাপনের বিকল্প নেই। উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে নির্ধারিত লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পপার্কসহ বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরিতে পূর্ণাঙ্গ ওয়ানস্টপ সেবা চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাঁচ জেলায় ডেডিকেটেড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পপার্ক স্থাপনের তাগিদ দেন। তিনি নরসিংদীতে বাস্তবায়নাধীন অটোমোবাইল শিল্পনগরির ৪০০ একর জমির মধ্যে ২০০ একর হালকা প্রকৌশল শিল্পের জন্য নির্ধারিত করে দেয়ার নির্দেশনা দেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের বর্তমান বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯ হাজার কোটি টাকার পণ্য দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বিশ্ববাজারে হালকা প্রকৌশল পণ্যের চাহিদা ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৩৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করছে। তৈরি পোশাকের পর এখাতে মূল্য সংযোজন ও রপ্তানির সুযোগ দিন দিন বাড়ছে। এখাত শ্রমঘন হওয়ায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিরও সুযোগ রয়েছে। এ বিবেচনায় রপ্তানি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের জন্য হালকা প্রকৌশল পণ্যকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ার’ ঘোষণা করেছেন। এর প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ শিল্পখাতে বিদ্যমান সম্ভাবনা কাজে লাগাতে শিল্প মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।