ভোরের সূর্যের প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উযাপন

আগের সংবাদ

লেবুতলার চকবাজারে ঐতিহ্যবাহী কাঁচিটান খেলা অনুষ্ঠিত

পরের সংবাদ

পলাশ থেকে নৌ-পথে ভারতে খাদ্যপণ্য রপ্তানীর নতুন দিগন্ত উন্মোচন

সুজন বর্মণ

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২১ , ১১:৪১ অপরাহ্ণ

নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রথমবারের মতো নৌপথে ভারতে খাদ্য পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে দেশের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে।

ভবিষ্যতে এই নৌপথ ব্যবহার করে শুধু কলকাতা নয় আসাম ও ভুটানসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশে আমরা এই পণ্য পাঠাতে চাই। ব্যবসায়ীক পরিধি দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। শুধু প্রাণ আরএফএল ১৪৫টি দেশে তাদের উৎপাদিত পণ্য পাঠিয়ে থাকে। এছাড়া দেশে আরো অনেক ধরণের ভারী পণ্য রয়েছে যা দেশে উৎপাদনসহ দেশের বাইরে পাঠানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নৌ পরিবহণ সবচেয়ে নিরাপদ।

মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদীর পলাশের প্রাণ আরএফ এল ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীতে নৌ-প্রটৌকল চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ হতে ভারতে নৌপথে খাদ্য পণ্যের প্রথম রপ্তানির শুভ উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ।

খাদ্য পণ্য রপ্তানির উদ্বোধন

মন্ত্রী বলেন, , নৌ পরিবহণ যে একটি সাশ্রয়ী পরিবহণ হতে পারে আমরা এই ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের আশ^স্ত করতে পেরেছি, ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসেছে প্রাণ আরএফএল গ্রুপ এগিয়ে এসেছে। আজকে যে খাদ্যপণ্য যাচ্ছে এটাকে পাইলট বলা যায়। ভবিষ্যতে অন্যন্য পণ্যও দেশের বাইরে যাবে। সড়ক পথে পরিবহণে খরচের যে সীমাদ্ধতা রয়েছে নৌপথে সীবদ্ধতা অনেক কম। একসঙ্গে অনেক পণ্য পরিবহণ করা যায়। পণ্যের দামও সেক্ষেত্রে অনেক কমে যাবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, ৭১ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর মুক্তি পাওয়ার আগে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের অর্থনীতিকে বিপাকে ফেলা হয়েছিল। তারপর অনেক ষড়যন্ত্র, অনেক ত্যাগের পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজ হাতে হাল ধরলেন। আজকে আমরা নৌপথে নতুনভাবে খাদ্যপণ্য রপ্তানি করতে পারছি, এটা অবশ্যই গর্বের। একসময় আমরা খেতে পেতাম না, আজকে আমরা খাবার বিক্রি করি। আজকে বাংলাদেশের প্রাণ গ্রুপ ১৪৫ টি দেশে তাদের পণ্য পৌছে দিয়েছে।

বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার জানিয়ে মন্ত্রী বলেন কারিগরী ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শিক্ষার্থীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় ভূমিকা রাখবে। যার ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সারাবিশ্বে আমরা উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে থাকতে পারবো।

এ সময় প্রাণ আরএফএল গ্রুপর চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমরা ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে চাই এবং সেটা নৌপথে। নৌপথ যাতায়ত খরচ অনেক কমিয়ে দেয়। বিশ্বেও ১৪৫ টিরও বেশি দেশে আমাদের পণ্য পৌছে গেছে। আমরা পৃথিবীর পেছনে দৌড়াবোনা , পৃথিবী বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকবে।

নরসিংদী-২ পলাশ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ বলেন, প্রাণ গ্রুপ নরসিংদীতে বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। যার মাধ্যমে আমার এলাকার সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি । এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

 

 

নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কমল কুমার ঘোষ বলেন, মার্চ মাস মানেই চেতনার মাস। মার্চ মানেই স্বাধীনতার মাস, এই মাসেই বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আবার এই মাসেই আমরা ভারতের সাথে নতুন এক পথে সম্পর্ক তৈরী করতে যাচ্ছি । আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত পাশে ছিল, তাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। আশা করি এই ধারা অব্যহত থেকে দেশ এগিয়ে যাবে।

এ সময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, বাণিজ্যসচিব ড. মুহাম্মদ জাফর উদ্দিন, নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমরেড গোলাম সাদেক, এনডিপি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কমল কুমার ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর, পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন, পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা ইয়াসমীন ও ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র শরীফুল হকসহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পণ্যবোঝাই জাহাজটি ২৫ হাজার কার্টন লিচি ডিংকস এর কার্টন নিয়ে নরসিংদীর শীতলক্ষ্যা থেকে যাত্রা শুরু করে নারায়ণগঞ্জ হয়ে খুলনার শেখবাড়িয়া দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে এবং কলকাতার বন্দরে গিয়ে পৌঁছবে। ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জাহাজটির গন্তব্য পৌঁছতে ৮ দিন সময় লাগবে। সড়কপথের চেয়ে নৌপথে পণ্য পরিবহন খরচ ৩০ শতাংশ কম। সড়কপথে অনেক জায়গায় রাস্তা খারাপ হওয়ায় পণ্য নষ্ট কিংবা পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু নৌপথ এক্ষেত্রে নিরাপদ।

প্রাণ গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রাণ গ্রুপের রফতানি কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। তখন পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরায় যায় প্রাণ চানাচুর। সেখান থেকে এখন ভারতের ২৮টি রাজ্যের প্রতিটিতেই প্রাণ পণ্য রফতানি হচ্ছে।