নরসিংদীর রায়পুরায় মৌসুমি ফল বাঙ্গির বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চান্দেরকান্দির বিস্তীর্ণ চর জুড়ে যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই বাহারি মৌসুমি ফল বাঙ্গির সমারোহ।
বাঙ্গি একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। তীব্র গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে তরমুজের পরেই বাঙ্গি স্থান ধরা যায়। তীব্র গরম আর পবিত্র মাহে রমজান মাসে সারাদিন রোজা থাকার পর শরীরের ক্লান্তির ছাপ মুছতে বেশিরভাগই ইফতারে বাঙ্গির চাহিদা থাকে।
নরসিংদীর রায়পুরার বিভিন্ন হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমি ফল বাঙ্গি।
সাড়ে তিন মাস নিবিড় পরিচর্যার পর মাঠে মাঠে এখন চলছে কৃষাণ-কৃষাণীর বাঙ্গি তোলার হিড়িক। তাদের চোখে মুখে আনন্দ। বাঙ্গির বাম্পার ফলন হওয়ায় ভালো দামে বিক্রি করতে পারায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। উৎপাদিত ফসল নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয় কৃষকরা।
কম পুঁজিতে ভালো মুনাফা ও প্রচুর ফলন পাওয়ায় এই এলাকার কৃষকরা বাঙ্গি চাষের প্রতি অধিক ঝুঁকছেন। রমজান মাসে প্রতি পিস বাঙ্গি ৭০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চান্দেরকান্দি এলাকার বেশিরভাগ মানুষই বাঙ্গি চাষ করে থাকেন। প্রতিদিনই নরসিংদী জেলাসহ আশেপাশের জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই বাঙ্গি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকরা বলছে, এটি অন্যান্য সবজি বা ফসলের চেয়ে চাষের তুলনায় আয় বেশি। তাই অধিকাংশ চাষি বাঙ্গি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। গতবারের তুলনায় এবার এখনো পর্যন্ত বাঙ্গির ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারি দরে বাঙ্গিগুলো প্রতি ১০০ পিস ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যা প্রতি পিস পাইকারি মূল্য ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
কৃষক মোঃ ইসমাইল জানান, তিনি ৮০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি উৎপাদন করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এই জমি থেকে বাঙ্গি বিক্রি করতে পারবে তিন লাখ টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে রায়পুরার চরাঞ্চলে ৩৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। এতে ৫৩০ মেট্রিক টন বাঙ্গি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতবছর ৩০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি আবাদ হয়েছিলো। এবছর ৫ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে এবং আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ টন বেশি উৎপাদন হয়েছে। কৃষি অফিস উপজেলার বাঙ্গি চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ ও বাঙ্গি চাষে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।
নরসিংদী মিরর/এফএ