নরসিংদীর রায়পুরায় দুই কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের দায়ে কিশোর গ্যাং লিডারসহ তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও রায়পুরা থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে সোমবার রাতে অপহৃত দুই কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার রাত ১০ টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশের মিডিয়া সমন্বয়ক ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জেলার রায়পুরা থানার হাসনাবাদ স্কুলপাড়া এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে শাহাদৎ (১৮), করিমগঞ্জ গ্রামের শহিদ কাজীর ছেলে মোঃ মুন্না কাজী (১৮) ও আমির হোসেন ভূইয়ার ছেলে মৃদুল ভূইয়া (১৮)।
জেলা পুলিশের মিডিয়া সমন্বয়ক ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার জানায়, সোমবার বিকালে স্থানীয় দুই কলেজছাত্রী হাসনাবাদ পশ্চিম বাজারস্থ একটি নার্সারীতে চারা কিনতে যায়। এসময় কথিত কিশোর গ্যাং লিডার সাহাদাত ও রাতুলের নেতৃত্বে নাসির, রাতুল, তানিম, আইমিন, রোহান ও মোজাম্মেল দেশিয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে ইজিবাইকে করে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
পরে অপহৃতদের পরিবারে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অন্যথায় দুই ছাত্রীর জীবন নষ্ট করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। উপায় না দেখে পরিবারের লোকজন বিকাশে ২১ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠালেও তারা আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
এ ঘটনার পর ওই দিনই পরিবারের লোকজন ৯৯৯ এ কল করাসহ নরসিংদীর পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর উপ পরিদর্শক জাকারিয়া আলম ও রায়পুরা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় যৌথ অভিযান শুরু করে।
পুলিশী অভিযান টের পেয়ে অপহরণকারীরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে রায়পুরা থানাধীন নীলকুঠি মোল্লা বাড়ি এলাকায় দুই কলেজ ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারলেও অপহরণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এদিকে হাসনাবাদ বাজারের একটি দোকানের বিকাশ নাম্বারে মুক্তিপণের টাকা নেয়া হলেও রাতে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অপহরণকারীরা টাকা তুলতে পারেনি।
পরদিন মঙ্গলবার সকালে বিকাশের দোকান থেকে মুক্তিপণের টাকা উত্তোলন করতে গেলে অপহরণে জড়িত মুন্না ও মৃদুলকে আটক করা হয় এবং তাদের দেয়া তথ্যমতে সাহাদাত কে আটক করা হয় এবং অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ইজিবাইক উদ্ধার ও মুক্তিপণের ২০ হাজার ৮ শত টাকা উদ্ধার করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর উপ পরিদর্শক জাকারিয়া আলম বলেন, এ ঘটনায় অপহরণের শিকার এক ছাত্রীর ভাই বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।