নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি ও তার স্বামী ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভোরে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) তালেবুর রহমান তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লায়লা কানিজ রাজধানীর একটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করলেও স্বামী রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের মাধ্যমে তার ভাগ্য খুলে যায়। গত ১৫ বছরে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। রায়পুরার মরজাল এলাকায় রয়েছে ওয়ান্ডার পার্ক নামে আধুনিক ইকো রিসোর্ট যা লাকি পার্ক নামেও পরিচিত। পৈত্রিক বাড়িতে নির্মাণ করেছে ডুপ্লেক্স ভবন। রয়েছে নিজের নামে সড়ক।
সাবেক সংসদ সদস্য রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর রাজনীতিতে লাকির উত্থান ঘটে। সরকারি চাকুরি ছেড়ে নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্বপালন করেন।
২০২২ সালে রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সাদেকের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে লায়লা কানিজ প্রার্থী হন। সংসদ সদস্য রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু’র প্রভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন তিনি। চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বে থাকা কালে এক বক্তব্যে ”সারাবিশ্বে উকিল আর সাংবাদিক অনেক সস্তায় পাওয়া যায়” বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।
এদিকে, মতিউরের ছেলে ইফাত গত বছর ১২ লাখ টাকা দামের একটি কোরবানির ছাগলের ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার পর বিতর্ক শুরু হয়। ছবিটি ভাইরাল হলে মতিউরের সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এরপর থেকে মতিউরের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি, বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং মতিউর ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে।
দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ জুন আদালত মতিউর, তার স্ত্রী ও সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সবশেষ গত ৬ জানুয়ারি, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিউর, লায়লা কানিজ, তাদের মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা এবং অর্ণবের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করে দুদক।
নরসিংদী মিরর/এফএ