নরসিংদীর সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আঃ মতিন সরকার আর নেই

আগের সংবাদ

রায়পুরায় আন্তর্জাতিক নারী দিবসে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

পরের সংবাদ

নরসিংদী শহরে  মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ জনজীবন

মো.রাসেল আহমেদ, নরসিংদী সদর

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২১ , ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

মশা! এখন যেন এক আতংকের নাম। শীতের মৌসুমে এ প্রাণীটির প্রভাব কম থাকলেও ইদানিং দলবল সহ আক্রমণ করছে দিনে কিংবা রাতে। বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, অফিস আদালত সব জায়গাই এখন মশার আধিপত্য।

নরসিংদী শহরে এ মৌসুমে ভয়ংকর ভাবে বাড়ছে প্রকোপ। অনেক বাড়িতে দেখা গেছে দিনের বেলাতেও জ্বলছে কয়েল ঝুলছে মশারি।

মশার এহেন বাড়াবাড়িতে বেড়েছে মশারি, স্প্রে আর কয়েলের বিক্রি। নরসিংদী বড় বাজারের কয়েকটি মশারি,কয়েল এবং স্প্রে বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে এসে মশা প্রতিরোধক এসব পণ্যের বিকিকিনি বেড়েছে ২ গুণ।

হঠাৎ করে মশার এমন উৎপাতের কারন হিসেবে মনে করা হচ্ছে নরসিংদী শহরের অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। শহরের আনাচে কানাচে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে। নরসিংদী বাজারের মেঘনা নদীর তীর, রেলওয়ে স্টেশনের খালপাড় এলাকা, নরসিংদী জেলা পরিষদ ভবনের সামনের অংশ ছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে ময়লার স্তুপ পড়ে আছে। এসব জঞ্জাল সরানোর কোনো প্রয়োজনই মনে করছেন না কর্তৃপক্ষ।

প্রতিদিন গড়ে কয়েকশত প্যাক মশার কয়েল, উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক মশারি ও মশানাশক স্প্রে বিক্রি হচ্ছে।

রান্না ঘরে সকালে খাবার তৈরি করছিলেন নরসিংদী পৌর শহরের ব্রাহ্মন্দী এলাকার নিপা নামের এক গৃহিণী। দেখা গেল তিনি সকাল বেলাতেই রান্নাঘরে কয়েল জ্বালিয়ে রেখেছেন। কারন জানতে চাইলে তিনি জানান, যে হারে মশার উপদ্রুপ বাড়ছে মশার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। মশার অত্যাচার থেকে বাঁচতে কয়েলই ভরসা।

পৌর শহরের ব্রাহ্মন্দী বালুচর এলাকায় একটি ছাত্রমেসে থাকেন রাজু। বিকেলে তার রুমে গিয়ে দেখা গেল তিনি মশারি খাটিয়ে খাটের ওপর বসে পড়াশোনা করছেন। সে বলেন, মশার কোনো দিন রাত্রি নেই! যখনই পারছে সমানতালে কামড়ে যাচ্ছে। মশার যন্ত্রণায় চেয়ার টেবিলে বসে পড়াশোনার জো নেই। তাই বাধ্য হয়েই মশারির ভেতরে বসে পড়াশোনা করতে হচ্ছে।

পৌর শহরের কাউরিয়া পাড়ার আবির হোসেন বলেন, বাসায় বাচ্চা রয়েছে। মশার কামড়ে সে শুধু চিৎকার করে। না পারছি তাকে মশারির ভেতর আটকে রাখতে না পারছি কয়েল ধরাতে। কয়েলে হয়তো বাচ্চার ক্ষতি হবে তাই ধরাইনা। আগে দেখতাম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কামানদাগা করতেন। এখন মশার যে বাড়াবাড়ি কামান দাগা জরুরি হয়ে পড়েছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উচিত জরুরি ভিত্তিতে কামান দাগা করা।

নরসিংদী শহরের বৌয়াকুড় এলাকার রুনা বলেন, বিকেলে যে বাসার ছাদে বসে একটু আড্ডা দিব তার কোনো উপায় নেই। ছাদে উঠলেই মশার উৎপাত। মশার যন্ত্রণায় ছাদে যাওয়াই বাদ দিয়ে দিয়েছি।

তবে মশার উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ হলেও মশারির ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতার মুখে ফুটেছে সুখের হাসি। এমনই এক ভ্রাম্যমাণ মশারি বিক্রেতা সেলিম মিয়া । তিনি বলেন, দিনে রাইতে যেমনে মাইনষেরে মশাই কামড়াইতাছে ,মাইনষে মশার যন্ত্রণায় অক্কনে খালি মশারি কিনে। আমার লাইগ্গা ভালাই অইছে। মশারির বেচতাম পারতাছি বেশি। কামায় রুজিও ভালাই অইতাছে।

অনেক চেষ্টা করেও নরসিংদী পৌরসভার মেয়র কিংবা দায়িত্বশীল কারো সাথে কথা বলা যায়নি। যাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে সবাই বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে চলে গেছেন।

অবশেষে নরসিংদী পৌরসভার মেডিকেল অফিসারের সাক্ষাত মিলেছে দু মিনিটের জন্য।

নরসিংদী পৌরসভার মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. সাজেদুল হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মশার উপদ্রব বাড়ছে। মশার বংশবিস্তার রোধ করতে হবে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মেয়র মহোদয়ের অনুমতি প্রয়োজন। তিনি অনুমতি দিলেই পৌর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন।